You are currently viewing মিশরীয় সভ্যতার TOP 100+ MCQ SAQ প্রশ্ন উত্তর
মিশরীয় সভ্যতার TOP 100+ MCQ SAQ প্রশ্ন উত্তর

মিশরীয় সভ্যতার TOP 100+ MCQ SAQ প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন :- প্লাইস্টোসিন যুগ বলতে কোন যুগ কে বোঝায় ?

উত্তর :- প্রায় ২৬ লক্ষ বছর আগের এক ভূতাত্ত্বিক, আবহাওয়া নির্ভর যুগকে বোঝায়।

প্রশ্ন :- প্লাইস্টোসিন যুগ কত বছর আগে শুরু এবং শেষ হয় ?

উত্তর :- প্লাইস্টোসিন যুগ প্রায় ২৫,৮০,০০০ বছর আগে শুরু হয় এবং ১১,৭০০ বছর আগে শেষ হয়। 

প্রশ্ন :- প্যালিওলিথিক যুগ বলতে কোন যুগ কে বোঝায় ?

উত্তর :- যখন আদিম মানুষ একদম প্রাথমিক পাথরের যন্ত্রপাতি বানাতে শুরু করেছিল।ওই যুগকে বোঝায়।

প্রশ্ন :- প্যালিওলিথিক যুগ কত বছর আগে শুরু এবং শেষ হয় ?

উত্তর :- প্যালিওলিথিক যুগ প্রায় ২.৬ মিলিয়ন বছর আগে এবং বর্তমান হতে ১০,০০০ বছর পূর্বে প্লাইস্টোসিন যুগের শেষভাগ।

প্রশ্ন :- উত্তর আফ্রিকার নীল নদ উপত্যকায় ঘন জনবসতি গড়ে তুলতে বাধ্য হয় কারা ? 

উত্তর :- সুপ্রাচীন আদি  মিশরীয় সভ্যতার মানুষ।  

প্রশ্ন :- কত খ্রিষ্টপূর্বব্দের মধ্যে নীলনদ উপত্যকার ছোট ছোট গোত্র বিকশিত হতে শুরু করে ?

উত্তর :- ৫৫০০ খ্রিষ্টপূর্বব্দের মধ্যেই। 

প্রশ্ন :-  বাদারি করা এবং তাদের উৎপত্তি কোন মরুভুমি থেকে ?

উত্তর :- আদি সংস্কৃতির মাঝে উচ্চ মিশরে সবচেয়ে বড় ছিল বাদারি। তাদের উৎপত্তি সম্ভবত লিবিয় মরুভূমিতে।

প্রশ্ন :-  তামা ব্যবহারের জন্য করা সবচেয়ে বেশি জ্ঞাত ?

উত্তর :- তামা ব্যবহারের জন্য বাদারি সবচেয়ে বেশি জ্ঞাত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় আইনি ব্যবস্থার প্রধানকে কি বলা হয় ?

উত্তর :- আইনি ব্যবস্থার প্রধান ছিলেন ফারাও।

প্রশ্ন :- কার দায়িত্ব ছিল প্রাচীন মিশরের আইন তৈরি করা ?

উত্তর :- ফারাও তার দায়িত্ব ছিল আইন তৈরি করা। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা এই ধারনাকে বলত মা’ত, কোন ধারণাকে বলা হতো ?

উত্তর :-ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, প্রাচীন মিশরীয়রা এই ধারনাকে বলত মা’ত। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা স্থানীয় বয়স্কদের নিয়ে কাউন্সিল গঠিত করে, তার নাম কী ছিল ?

উত্তর :- গঠিত কাউন্সিল যার নাম ছিল “কেনবেত”।

প্রশ্ন :-  প্রাচীন মিশরীয়রা কটি ঋতু চিহ্নিত করেছিল এবং কী কী ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয়রা তিনটি ঋতু চিহ্নিত করেছিল,আখেত (বন্যাঋতু) পেরেত (রোপনঋতু) এবং শেমু (ফসল কাটার ঋতু)।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীদের প্রধানত উৎপাদিত ফল ও ফসল কি কি ছিল উল্লেখ করো ?

উত্তর :- মিশরীয়রা এমার গম, বার্লি, শণগাছ, প্যাপিরাস, এবং সবজির মাঝে ছিল পেঁয়াজ, রসুন, লেটুস, ডাল, তরমুজ, স্কোয়াশ এবং অন্যান্য ফসল। একইসাথে আঙুর চাষ করা হত এবং আরো কিছু শস্য উৎপাদন করত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় কোন কোন পশু পাখির উল্লেখ পাওয়া যাই ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় নানা ধরণের পশু পাখির উল্লেখ পাওয়া যাই, যেমন- সিংহ, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, বিড়াল, শুকর, গাঁধা, উট, গরু, হাঁস, কবুতর, চিল, শকুন, বাজ, মৌমাছি, নীল নদের নানা ধরণের মাছ ইত্যাদি। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের প্রাকৃতিক সম্পদ হিসাবে কি কি ব্যবহার করা হতো ? উল্লেখ করো। 

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয়দের প্রাকৃতিক সম্পদ হিসাবে তামা,সীসা, সোনার খনি, লোহার খনি, গ্রানাইট, মালাকাইট, পাললিক, কোয়ার্টজাইট, চুনাপাথর, ব্যাসাল্ট ও বেলেপাথর,  এলাব্যাস্টার, চকমকি পাথর,নাত্রুনের লবণ ইত্যাদি। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সাথে নুবিয়ার বাণিজ্যসম্পর্ক স্থাপিত হয় কি কারণে ?

উত্তর :- প্রাকরাজবংশিয় যুগে নুবিয়ার সাথে সোনা এবং ধূপ সংগ্রহের জন্য নুবিয়ার সাথে বাণিজ্যসম্পর্ক স্থাপিত হয়।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সাথে ফিলিস্তিন অঞ্চলেরও বাণিজ্য স্থাপিত হয়, কি কারণে ?

উত্তর :- রাজা নারমার কানানে মিশরীয় মৃৎপাত্র তৈরি করাতেন এবং তা মিশরে আমদানি করাতেন।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের পঞ্চম রাজবংশের সময় পুন্ট থেকে কি কি আম্দানি শুরু হয় ?

উত্তর :- পঞ্চম রাজবংশের সময় থেকে পুন্ট থেকে সোনা, সুগন্ধী রেসিন, আবলুস, হাতির দাঁত এবং বন্য প্রাণী যেমন বানর ও বেবুন আম্দানি শুরু হয়।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় আফগানিস্তান হতে কি কি আমদানি করা হত ?

উত্তর :- মিশরীয়রা লাপিস-ল্যাজুলির খুব সমাদর করত যা আসত সুদূর আফগানিস্তান হতে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের ক্রীট এবং গ্রীস হতে মিশরে প্রধানত কি আমদানি করা হত ?

উত্তর :- ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের ক্রীট এবং গ্রীস হতে মিশরে জলপাই তেল আসত। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা কিসের বিনিময়ে বাণিজ্য করতো ?

উত্তর :- মিশর থেকে প্রধানত খাদ্যশস্য, লিনেন, সোনা, প্যাপিরাস এবং কাচ ও পাথরের বিভিন্ন সামগ্রীর বিনিময়ে বাণিজ্য করতো। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয় ভাষায় টি ব্যঞ্জনবর্ণ ছিল ?

উত্তর :- অন্যান্য আফ্রোএশিয়াটিক ভাষার মত প্রাচীন মিশরীয় ভাষায় ২৫ টি ব্যঞ্জনবর্ণ ছিল।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয় ভাষা কোন ভাষাপরিবারের অন্তর্ভুক্ত ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয় ভাষা উত্তর অফ্রোএশিয়াটিক ভাষাপরিবারের অন্তর্ভুক্ত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় ফারাওয়ের প্রতিনিধি এবং প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করতেন তাকে কি বলা হতো ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় ফারাওয়ের প্রতিনিধি এবং প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করতেন তাকে “উজীর” বলা হতো। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় ফারাওয়ের প্রতিনিধি উজির কি কি প্রতিনিধিত্ব করতেন ?

উত্তর :- তিনি ভূমি জরিপ কাজ, কোষাগার, নির্মাণ প্রকল্প, বিচার ব্যবস্থা এবং আর্কাইভের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতেন।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের সময় রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোথায় সংরক্ষণ করা হতো ?

উত্তর :- মন্দিরগুলি শুধু প্রার্থনার স্থান হিসেবেই ভূমিকা পালন করত না, বরং একইসাথে রাষ্ট্রীয় সম্পদ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের কাজও করত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের ইতিহাসে প্রাক-রাজবংশীয় যুগ বলা হয়, কোন যুগকে বলা হয় ?

উত্তর :- ৫০০০ থেকে ৩২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত

প্রশ্ন :- কে এবং কত অর্থে এক শক্তিশালী সামন্ত উত্তর ও দক্ষিণ মিশরকে একত্রিত করে একটি বড় রাজ্যে পরিণত করেন।

উত্তর :- ৩২০০ অর্থে রাজা মেনেস নামে এক শক্তিশালী সামন্ত.

প্রশ্ন :- কে নেমফিশ শহরে মেনেস তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন ?

উত্তর :- মেনেস.

প্রশ্ন :- পরবর্তীকালে এই রাজধানী কোন শহরে স্থানান্তরিত হয় ?

উত্তর :- থিবস শহরে স্থানান্তরিত হয়।

প্রশ্ন :-  মিশরের প্রাচীন ইতিহাসকে ঐতিহাসিকগণ কটি পর্বে বিভক্ত করেন।

উত্তর :- ৫টি পর্বে বিভক্ত করেন।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের প্রাচীন ইতিহাসকে ঐতিহাসিকগণ কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করেন। তার নাম ও সময় কাল উল্লেখ করো।  

উত্তর :- (১) প্রাক রাজবংশী (খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ ৩২),

             (২)প্রাচীন রাজত্বের যুগ (খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০-২৩০০),

(৩)মধ্য রাজত্বের যুগ (২৩০০-১৭৮৮),

(৪)বৈদেশিক হিসাদের  আক্রমণ (১৭৫০-১৫৮০),

(৫)নতুন রাজত্বের যুগ (১৫০০-১০৯)।

প্রশ্ন :- নোমগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে দু’টি বৃহৎ বৃহৎ রাজ্যের সৃষ্টি করে। দু’টি বৃহৎ রাজ্যের নাম কি ?

উত্তর :- এদের একটি উত্তর মিশর এবং অপরটি দক্ষিণ মিশর নামে অভিহিত হয়।

প্রশ্ন :- কত  খ্রিস্টপূর্বে দু’টি অংশ একত্রিত হয়ে মিশর রাজ্য গঠন করে।

উত্তর :- খ্রিস্টপূর্বে ৩,৫০০ অব্দে.

প্রশ্ন :- কার অধীনে দু’টি রাজ্য ঐক্যবদ্ধ হয় ?

উত্তর :- দক্ষিণ মিশরের রাজা মেনেসের অধীনে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের রাজার উপাধি কী ছিল ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরের রাজার উপাধি ছিল ‘ফরাও’।

প্রশ্ন :- কোন যুগে নীল নদের অববাহিকায় মিশরীয় সভ্যতার সূচনা হয় ?

উত্তর :- প্রাক-রাজবংশীয় যুগে।

প্রশ্ন :- ফারাও শব্দের অর্থ কি ?

উত্তর :- ‘বড়বাড়ি’।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের ‘ফারাও’ বা সম্রাটের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন কে ?

উত্তর :- রাজা মেনেস,

প্রশ্ন :- ‘নোম’ কাকে বলা হত ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশর কতগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল। এগুলোকে ‘নোম’ বলা হতো। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের সমাজের মানুষকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় তাহলো কি কি ?

উত্তর :- রাজ পরিবার, পুরোহিত, অভিজাত, লিপিকার, ব্যবসায়ী, শিল্পী, কৃষক ও ভূমিদাস।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের  প্রথম সরকারি ব্যবস্থার কি  চালু হয়।

উত্তর :- প্রথম সরকারি ব্যবস্থার চাষাবাদ চালু হয়।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের উৎপাদিত ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কী কী ফসল ছিল ?

উত্তর :- ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গম, ঘৰ, তুলা, পেঁয়াজ, পিচ ইত্যাদি।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরে উৎপাদিত গম, লিনেন কাপড় ও মাটির পাত্র কোথায় কোথায় রপ্তানি হতো। 

উত্তর :- ফিট দ্বীপ, ফিনিশিয়া, ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায় রপ্তানি হতো।

প্রশ্ন :- বিভিন্ন দেশ থেকে মিশরীয়রা মূলত কী কী আমদানি করতো ?

উত্তর :-  প্রাচীন মিশরীয়রা মূলত স্বর্ণ, রৌপ্য, হাতির দাঁত, কাঠ ইত্যাদি আমদানি করতো।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের নীল নদের উৎপত্তি কোথা থেকে ?

উত্তর :- মিশরের নীল নদের উৎপত্তি আফ্রিকার লেক ভিক্টোরিয়া থেকে। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়গণের অর্থনৈতিক জীবনের মূল ভিত্তি ছিল কি ?

উত্তর :- মূল ভিত্তি ছিল কৃষি।

প্রশ্ন :- উৎপাদিত শস্যের মধ্যে কী কী  উল্লেখযোগ্য ছিল ?

উত্তর :- উৎপাদিত শস্যের মধ্যে গম, যব, জোয়ার, তরিতরকারি, তুলা, আঙ্গুর, শন ও অন্যান্য ফল উল্লেখযোগ্য ছিল।

প্রশ্ন :- দক্ষিণাঞ্চলের সাথে বাণিজ্যিক লেনদেন দিয়ে হত ?

উত্তর :- বাণিজ্যিক লেনদেন নীলনদ দিয়েই হত।

প্রশ্ন :- কোন কোন দেশের সাথে স্থলপথে বাণিজ্য চলত ?

উত্তর :- মেসোপটেমিয়া ও সিরিয়া.

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের প্রধান রপ্তানি ও রপ্তানি দ্রব কী কী ছিল ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরের প্রধান রপ্তানি ছিল গম ও স্বর্ণালঙ্কার এবং প্রধান আমদানি দ্রব্য ছিল ধাতুনির্মিত অস্ত্রশস্ত্র, উটপাখির পালক, মসলা, মুগ্ধ বস্ত্র ইত্যাদি।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের লিখন পদ্ধতি নাম কি ?

উত্তর :- হায়ারোগ্লিফিক (Hieroglyphics).

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরে আরও দু’টি লিপির নাম কি ?

উত্তর :- একটি হেরাটিক লিপি এবং অপরটি ডেমোটিক লিপি নামে অভিহিত হয়।

প্রশ্ন :- জনপ্রিয়তা লাভ করে কোন লিপি ?

উত্তর :- ডেমোটিক লিপি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

প্রশ্ন :- সপ্তম শতাব্দী হতে পঞ্চম শতাব্দী পর্যন্ত ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল কোন লিপি ?

উত্তর :- ডেমোটিক লিপি।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা এক প্রকার ঘাস দ্বারা তারা কাগজ প্রস্তুত করত। তার নাম উল্লেখ করো ?

উত্তর :- প্যাপিরাস নামক এক প্রকার ঘাস।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের তৈরিকৃত কাগজের নিদর্শন কোন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে ?

উত্তর :-  ব্রিটিশ মিউজিয়ামে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়দের অন্যান শিল্পের নাম উল্লেখ করো ?

উত্তর :-  কাঁচ, মৃৎ, তাঁত, মৃৎপাত্র, স্বর্ণালঙ্কার, কাঠের আসবাবপত্র, সূক্ষ্ম বস্তু, হাতির দাঁতের তৈজষপত্র, বাদ্যযন্ত্র, খেলনা ইত্যাদি তৈরি করতে জানত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা কোন বিদ্যায় তারা পারদর্শি ছিল ?

উত্তর :-  জ্যোতির্বিদ্যা ও অঙ্কে তাদের পারদর্শিতা ছিল। 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা কি ভাবে গণনা কাজ করত ?

উত্তর :- তারা চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ ও নক্ষত্রের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে গণনা কাজ করত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়রা সৌর পঞ্জিকা (Calendar) তৈরি করে কি কাজে ব্যবহার করতো ?

উত্তর :- সৌর পঞ্জিকা (Calendar) তৈরি করে তারা তাদের কৃষি-পরিকল্পনা কাজে ব্যবহার করতো।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের শেষসম্রাট কে ছিলেন ?

উত্তর :- প্রাচীন মিশরের বিশতম রাজবংশের শেষসম্রাট ছিলেন একাদশ রামসেস।

প্রশ্ন :- কোন সম্রাটের সময় গৃহযুদ্ধের সূচনা হয় ?

উত্তর :- শেষসম্রাট একাদশ রামসেস।

প্রশ্ন :- ৩৩২ খ্রিপূর্ব কোন সম্রাট মিশর অধিকার করেন ?

উত্তর :- সম্রাট আলেকজান্ডার।

প্রশ্ন :- কার অধিকারের পরে মিশরে “টলেমী রাজবংশ” প্রতিষ্ঠিত হয় ?

উত্তর :- সম্রাট আলেকজান্ডার।

প্রশ্ন :- ক্লিওপেটা কোন রাজবংশের বাণী ?

উত্তর :-  “টলেমী রাজবংশ”

প্রশ্ন :- রোমানদের দ্বারা করা বারবার আক্রান্ত হয় ?

উত্তর :-  ক্লেওপেট্রারা। 

প্রশ্ন :- ক্লেওপেট্রার পরে মিশরে করা শাসন করে ?

উত্তর :-  রোমানরা মিশরে রোমান শাসন বিস্তার করে।

প্রশ্ন :- যুদ্ধ এবং শিকারের দেবতার নাম কি ?

উত্তর :- দেবতা “আন-হার“

প্রশ্ন :- সূর্যের দেবতার নাম কি ?

উত্তর :- দেবতা বেন্নু

প্রশ্ন :- শস্য দেবতা কাকে বলাহয় ?

উত্তর :- দেবতা নেপার

প্রশ্ন :- বাতাসের দেবতা কাকে বলা হয় ?

উত্তর :- দেবতা `শ্যু` কে। 

প্রশ্ন :- সিংহ দেবী কাকে বলা হয় ?

উত্তর :- দেবী `মেনহিট` কে।  

প্রশ্ন :- চাষবাসের দেবী কাকে বলা হয় ?

উত্তর :-  দেবী `রেনেনুতেত` কে। 

প্রশ্ন :- যুদ্ধের দেবী বা দেবতা তাহ-এর স্ত্রী কে ?

উত্তর :- দেবী `সেখমেট`কে। 

প্রশ্ন :- সুরক্ষা এবং যাদুর দেবী কাকে বলা হয়। 

উত্তর :- শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় দেবী আইসিস কে।

৩০০ থেকে ৫০০ শব্দের প্রশ্ন উত্তর 

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করো। 

উত্তর :- আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরভাগে নীলনদের অববাহিকায় এক বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড মিশর নামে পরিচিত। সভ্যতার ইতিহাসে এ ভূ-খণ্ডে বসবাসকারী জাতির এক সুমহান ঐতিহ্য রয়েছে। প্রাচীন সভ্যতার উন্মেষ সর্বপ্রথম মিশরেই ঘটেছিল। প্রাচীন মিশরের এ সভ্যতা গড়ে উঠতে সুদীর্ঘ সময় লেগেছিল। অধ্যাপক ফ্রিল্ডার্স প্রেট্রি মিশরীয় সভ্যতাকে খ্রিস্টপূর্ব দশ হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতা বলে শনাক্ত করেছেন। মানব জাতির ইতিহাসে মিশরীয় সভ্যতার অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক সেইচ (Sayce) বলেছেন, “আমরা প্রাচীন সভ্যতার উত্তরাধিকার এবং সেই প্রাচীন সভ্যতার ভাল অংশটুকু মিশরেই সৃষ্টি।”

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার উন্মেষের মূলে প্রকৃতির অবদান ছিল অপরিসীম। নীলনদ আবহমানকাল ধরে মিশরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে এক অপূর্ব যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে। এ ভূ-খণ্ডের পাহাড়-পর্বত, মরুভূমি, জলপ্রপাত, ভূমধ্যসাগর প্রভৃতির নায় প্রাকৃতিক অবরোধগুলো মিশরকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ হতে সর্বদাই রক্ষা করেছে। এভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং অবস্থা মিশরীয় সভ্যতার ক্রমবিকাশে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর :- ৫০০০ থেকে ৩২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে মিশরের ইতিহাসে প্রাক-রাজবংশীয় যুগ বলা হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০ অর্থে রাজা মেনেস নামে এক শক্তিশালী সামন্ত উত্তর ও দক্ষিণ মিশরকে একত্রিত করে একটি বড় রাজ্যে পরিণত করেন। নেমফিশ শহরে মেনেস তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এই রাজধানী থিবস শহরে স্থানান্তরিত হয়। রাজা মেনেসের পর থেকে তিন হাজার বছর পর্যন্ত প্রাচীন মিশরে ৩১টি রাজবংশের ইতহিাস পাওয়া যায়। মিশরের প্রাচীন ইতিহাসকে ঐতিহাসিকগণ কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করেন। প্রথমতঃ প্রাক রাজবংশী (খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ ৩২), প্রাচীন রাজত্বের যুগ (খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০-২৩০০), মধ্য রাজত্বের যুগ (২৩০০-১৭৮৮), বৈদেশিক হিসাদের  আক্রমণ (১৭৫০-১৫৮০), নতুন রাজত্বের যুগ (১৫০০-১০৯)।

খ্রিস্টের জন্মের চার হাজার বছর পূর্বে মিশরীয়গণ একটি সুগঠিত ও সুসংবদ্ধ জাতি হিসেবে মিশর রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করে। প্রাচীনকালে মিশরে নোম বা নগররাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। এ নোমগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে দু’টি বৃহৎ বৃহৎ রাজ্যের সৃষ্টি করে। এদের একটি উত্তর মিশর এবং অপরটি দক্ষিণ মিশর নামে অভিহিত হয়। খ্রিস্টপূর্বে ৩,৫০০ অব্দে এ দু’টি অংশ একত্রিত হয়ে অথও মিশর রাজ্য গঠন করে। দক্ষিণ মিশরের রাজা মেনেসের অধীনে দু’টি রাজ্য ঐক্যবদ্ধ হয়। এরপর প্রায় তিন হাজার বছর পর্যন্ত প্রাচীন মিশরে ৩১টি রাজবংশ রাজত্ব করে। মিশরের রাজার উপাধি ছিল ‘ফরাও’।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো। 

উত্তর :- প্রাক-রাজবংশীয় যুগে নীল নদের অববাহিকায় মিশরীয় সভ্যতার সূচনা হয়। এ যুগে মিশরীয়রা কৃষি কাজে সেচব্যবস্থার বিভিন্ন কৌশল আবিষ্কার করে। এ ছাড়া তারা লিখন পদ্ধতি, উন্নতমানের কাপড়, সৌরপঞ্জিকা প্রস্তুত করে । ৩২০০ খ্রিঃ পূর্বাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাচীন রাজত্বকাল। রাজা মেনেস উত্তর ও দক্ষিণ মিশরকে এক করে একটি বড় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাচীন মিশরের সম্রাটদের ফারাও বলা হতো। ফারাও শব্দের অর্থ ‘বড়বাড়ি’। বিশাল প্রাসাদে বসবাসকারী ফারাওদের মনে করা হতো ঈশ্বরের সন্তান। তাঁরা একই সঙ্গে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। সম্রাটের প্রধান পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োজিত থাকতেন একজন উজির বা প্রধানমন্ত্রী। মিশরের ‘ফারাও’ বা সম্রাটের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন রাজা মেনেস, প্রথমত আহমোজ, রাজা তুথমোস, সম্রাট ইখনাটন এবং প্রথম ও দ্বিতীয় রামেসিস। পরাক্রমশালী তৃতীয় ব্যামেসিসের মৃত্যুর পর ফারাওদের শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের রাষ্ট্র ও সমাজ সম্পর্কে আলোচনা করো। 

উত্তর :- প্রাক-রাজবংশীয় যুগে মিশর কতগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল। এগুলোকে ‘নোম’ বলা হতো। মিশরের প্রথ রাজা বা ফারাও-এর (মেনেস বা নামার) অধিনে ঐক্যবদ্ধ মিশরের রাজধানী ছিল দক্ষিণ মিশরের মেফিল। মিশরীয় *পের-ও’ শব্দ থেকে ফারাও শব্দের জন্ম। ফারওয়া ছিলেন অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। তারা নিজেদেরকে সূর্য দেবতার বংশধর মনে করতেন। ফারাও পদটি ছিল বংশানুক্রমিক। অর্থাৎ ফারাওয়ের ছেলে হতো উত্তরাধিকার সূত্রে ফারাও। পেশার উপর ভিত্তি করে মিশরের সমাজের মানুষকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন: রাজ পরিবার, পুরোহিত, অভিজাত, লিপিকার, ব্যবসায়ী, শিল্পী, কৃষক ও ভূমিদাস।

মিশরের অর্থনীতি মূলত ছিল বৃধি নির্ভর রে তীরে গড়ে তোলা সভ্যতার মানুষ অর্থাৎ মিশরীয়রার সময় বাঁধ তৈরি করে ফসল রক্ষা করত। আবার শুঙ্ক মৌসমে ফসলের ক্ষেতে পানি দেয়ার জন্য যান কেটে গড়ে তুলেছিল সেচ ব্যবস্থা। মিশরের প্রথম সরকারি ব্যবস্থার চাষাবাদ চালু হয়। দুধিনির্ভর মিশরের উৎপাদিত ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গম, ঘৰ, তুলা, পেঁয়াজ, পিচ ইত্যাদি। ব্যবসায়-বাণিজ্যেও মিশর ছিল অগ্রগামী। মিশরে উৎপাদিত গম, লিনেন কাপড় ও মাটির পাত্র ফিট দ্বীপ, ফিনিশিয়া, ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায় রপ্তানি হতো। বিভিন্ন দেশ থেকে মিশরীয়রা স্বর্ণ, রৌপ্য, হাতির দাঁত, কাঠ ইত্যাদি আমদানি করতো।

প্রশ্ন :- নীল নদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।

উত্তর :- মিশরের নীল নদের উৎপত্তি আফ্রিকার লেক ভিক্টোরিয়া থেকে। সেখান থেকে নদটি নানা দেশ হয়ে মিশরের মধ্য দিয়ে মধ্যসাগরে এসে পড়েছে। ইতিহাসের জনক ‘হেরোডোটাস’ যথার্থই বলেছেন- ‘মিশর । থাকলে মিশর মরুভূমিতে পরিণত হতো। প্রাচীন কালে প্রতিবছর নীল নদে বন্যা হতো। ক্যার পর পানি সরে গেলে দুই তীরে পলিমাটি পড়ে জমি উর্কা হয়ে যেতো। জমে থাকা পলিমাটিতে জন্মাতো নানা ধরনের ফসল।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের কৃষি ও বাণিজ্য সম্পর্কে আলোচনা করো। 

উত্তর :- মিশরীয়গণ কৃষি ও ব্যবসায়-বাণিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করত। তাদের অর্থনৈতিক জীবনের মূল ভিত্তি ছিল কৃষি। নীলনদে বাঁধের ব্যবস্থা করে তারা বিস্তীর্ণ জমিতে চাষ করত। তাদের উৎপাদিত শস্যের মধ্যে গম, যব, জোয়ার, তরিতরকারি, তুলা, আঙ্গুর, শন ও অন্যান্য ফল উল্লেখযোগ্য ছিল। কৃষিকার্যের ন্যায় ব্যবসায়-বাণিজ্যেও মিশর প্রকৃত উন্নতি সাধন করে। ফারাওদের জাহাজগুলো নীলনদ দিয়ে আরও দক্ষিণে আফ্রিকার মূল ভূ-খণ্ড হতে মেহগনি কাঠ ও হাতির দাঁত সংগ্রহ করত। বাণিজ্য জাহাজ চলাচলের জন্য মিশরীয় বদ্বীপের পূর্বাঞ্চলের সাথে লোহিত সাগরের সংযোগ করে একটি খাল খনন করা হয়েছিল। দক্ষিণাঞ্চলের সাথে বাণিজ্যিক লেনদেন নীলনদ দিয়েই হত। মেসোপটেমিয়া ও সিরিয়ার সাথে স্থলপথে বাণিজ্য চলত। মিশরের প্রধান রপ্তানি ছিল গম ও স্বর্ণালঙ্কার এবং প্রধান আমদানি দ্রব্য ছিল ধাতুনির্মিত অস্ত্রশস্ত্র, উটপাখির পালক, মসলা, মুগ্ধ বস্ত্র ইত্যাদি।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয় শিল্পকলা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- প্রাচীন মিশরের শিল্পচর্চার প্রকাশ ঘটেছিল স্থাপত্যশিল্পে। প্রাচীন মিশরের পিরামিড ও মন্দিরসমূহের স্থাপত্যবিদ্যায় মিশরীয়দের শিল্পকলার ক্ষেত্রে চরম উৎকর্যের স্বাক্ষর বহন করছে। বিশ-বাইশ লাখ বিশাল প্রস্তরখণ্ডকে নিখুঁতভাবে জোড়া দিয়ে তারা চারশত হতে পাঁচশত ফুট পর্যন্ত উঁচু পিরামিড তৈরি করত। এতে তাদের বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি কৌশলের ছাপ রয়েছে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের ভাস্কর্য ও চিত্রাঙ্কন বিদ্যা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- প্রাচীন মিশরে ভাস্কর্য ও চিত্রাঙ্কন শিল্পও বেশ উল্লেখযোগ্য ছিল। পিরামিড ও মন্দিরের অভ্যন্তরে অলঙ্করণের প্রয়োজনে এ শিল্পরীতির প্রবর্তন হয়। সম্রাটদের সুবিশাল মূর্তি মিশরীয় ভাস্কর্যের নিদর্শন। এসব মূর্তির কোন কোনটি ৯০ ফুট পর্যন্ত উঁচু ছিল। ভাস্কর্য শিল্পের আর একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন হলো স্ফিংস। সিংহের দেহে ফারাওয়ের মুখ বসিয়ে স্ফিংস নির্মিত হত। ফারাও যে সিংহের মত শক্তিশালী ও সাহসী, স্ফিংস-এর মধ্য দিয়ে এটাই পরিস্ফুট করার চেষ্টা করা হত। মিশরীয় চিত্র শিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলোর মধ্যে “জলাভূমির ঘুমন্ত ষাঁড়,” কূল ও ফল শোভিত গাছ”, “পলায়নরত হরিণ” প্রভৃতি রঙিন চিত্র তখনকার মন্দিরের দেয়ালে শোভা বৃদ্ধি করেছিল

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- মনের ভাব ব্যক্ত করার জন্য মিশরীয়দের লিখন পদ্ধতি বিশ্ব-সভ্যতার ইতিহাসে এক অক্ষয় অবদান। খ্রিস্টপূর্ব চার হাজার বছর পূর্বে মিশরীয়রা হায়ারোগ্লিফিক (Hieroglyphics) নামে এক ধরনের লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার করে। এর পূর্বে ছবির সাহায্যে এ লেখার কাজ চলত এবং ছবিগুলো এমনভাবে করা হত যাতে মনের ভাব প্রকাশ পায়। মিশরে প্রথমে যে লিখন পদ্ধতি বা হায়ারোগ্লিফিক উদ্ভাবিত হয়, তা সাধারণত ডানদিক হতে লেখা হত। তবে বামদিক হতে লেখার নিদর্শন কিছু কিছু পাওয়া গিয়েছে। প্রাচীন মিশরীয় ভাষার সাথে ঐ লিপির বা হায়ারোগ্লিফিক-এর হুবহু মিল ছিল।

প্রাচীন মিশরে আরও দু’টি লিপির প্রবর্তন হয়েছিল বলে জানা গেছে। এ লিপিম্বয়ের একটি হেরাটিক লিপি এবং অপরটি ডেমোটিক লিপি নামে অভিহিত হয়। এরা অবশ্য হায়ারোগ্লিফিক লিপিরই অপভ্রংশ। লিখনের ক্ষেত্রে ডেমোটিক লিপি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু হেরাটিক লিপির ব্যবহার ক্রমশ লোপ পায়। ডেমোটিক লিপি মিশরে খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দী হতে পঞ্চম শতাব্দী পর্যন্ত ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। মিশরের লিখন পদ্ধতি প্রসঙ্গে রসেটা (Rossetta) ফলকের উল্লেখ অবশ্যই করা দরকার। মিশরীয় লিপির পাঠোদ্ধারের কাজে ফলকটির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের কাগজ তৈরি পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয়গণ তাদের লেখার কাজে ব্যবহার করার জন্য এক প্রকার কাগজ তৈরি করতে জানত। প্যাপিরাস নামক এক প্রকার ঘাস দ্বারা তারা কাগজ প্রস্তুত করত। তাদের তৈরিকৃত কাগজের নিদর্শন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। কাগজ তৈরি করেই তারা ক্ষান্ত ছিল না, প্রাচীন মিশরবাসী লেখার জন্য দোয়াত এবং কলমও তৈরি করত।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরের বিজ্ঞানশাস্ত্র সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাচীন মিশরীয়দের বহু অবদান রয়েছে। জ্যোতির্বিদ্যা ও অঙ্কে তাদের পারদর্শিতা ছিল। এ দুই শাখায় তাদের অসামান্য অবদান প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার একটি উল্লেখযোগ্য দিক। অবশ্য তারা এ ক্ষেত্রে মেসোপটেমীয়দের সমকক্ষ ছিল না। তারা যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগের ন্যায় বিষয়গুলোতে অভ্যস্ত ছিল। বীজগণিত অপেক্ষা জ্যামিতিক বিষয়ে তাদের জ্ঞান বেশি ছিল।

পিরামিডের নির্মাণকৌশলে তাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায়। চিকিৎসাবিদ্যায়ও তাদের জ্ঞান ছিল। তারা চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ ও নক্ষত্রের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে গণনা কাজ করত। এভাবে সৌর পঞ্জিকা (Calendar) তৈরি করে তারা তাদের কৃষি-পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। তারা জোয়ার-ভাটা ও বন্যার কারণ এবং সময় সম্বন্ধে হিসাব রাখত। এরূপ সমগ্র বিশ্ব যখন অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন সভ্যতার ক্ষেত্রে মিশরীয়দের অবদান সত্যই বিস্ময়কর।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয়  পিরামিড সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- প্রাচীন মিশরীয় শিল্পকলা ও স্থাপত্যের আশ্চর্য নিদর্শন ‘পিরামিজ। পাথর দিয়ে তৈরী ত্রিকোনাকার পিরামিড আজও মিশরের কায়রে শহরে অনুরে সভ্যতার ইতিহাস বহন করছে। এ সকল পিরামিডের অভ্যন্তরে মিশরের রাজা এবং সম্ভ্রান্ত লোকদের মৃতদেহ (মমি) করে রাখা হয়েছে। লক্ষাধিক শাখা টুকরো করে নিখুঁতভাবে জোড়া দিয়ে এই পিরামিড তৈরী করা হতো এবং এক একটা পিরামিড চার থেকে পাঁচশ ফুট উঁচু ছিল। এ থেকে সহজেই অনুমান করা যায় মিশরীয়দের বিজ্ঞান ও কারিগরি কৌশল কতো উন্নত ছিল।

প্রশ্ন :- প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার পতন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। 

উত্তর :- রাজা নারমারের প্রতিকৃতি প্রাচীন মিশরের বিশতম রাজবংশের শেষসম্রাট ছিলেন একাদশ রামসেস। এ সময় মিশরে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। ১০৮০ খ্রিঃপূর্বাব্দে থিবস শহরের প্রধান পুরোহিত বা ধর্মযাজক সিংহাসন দখল করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫ অর্থে পারসা রাজশক্তি মিশর অধিকার করলে মিশরীয় সভ্যতার অবসান ঘটে। অতঃপর ৩৩২ খ্রিপূর্বক সম্রাট আলেকজান্ডার মিশর অধিকার করেন। তার পর থেকে মিশরে “টলেমী রাজবংশ” প্রতিষ্ঠিত হয়। টলেমী রাজবংশ দীর্ঘদিন মিশর শাসন করে। এই বংশেরই বাণী ছিলেন বহু আলোচিত ও জগত খ্যাত বানী ক্লিওপেটা। ক্লেওপেট্রার সময় মিশর বারবার রোমানদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। কালক্রমে রোমানরা মিশরে রোমান শাসন বিস্তার করে।

Leave a Reply