You are currently viewing বাংলা | ফাজিল | bnginfo.com

বাংলা | ফাজিল | bnginfo.com

প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান – ১

প্র, চোখ কেন সবুজ চায় ?
উ, আরোগ্যের জন্য সবুজ অত্যন্ত দরকার।
প্র, রজনী চাটুজ্জের বয়স কত ?
উ, 68 বছর।
প্র, থীবস কী ?
উ, সাত দরজা।
প্র, মঙ্গলে বাদলা লাগলে কতদিন থাকে ?
উ, 5 দিন থাকে।
প্র, চারণ কবি নামে খ্যাত কে ?
উ, মুকুন্দ দাস।
প্র, করিম ফরাজী একদা কি ছিল ?
উ, পেশাদার লাঠিয়াল।
প্র, “সবুজের অনটন ঘটে” কোথায় কেন ঘটে ?
উ, শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়, সেই জন্য শহরে সবুজের অনটন ঘটে
প্র, “রাজনীতি বড় কূট” কথাটি কে বলেছিল ?
উ, রাজনীতি বড় কূট কথাটি নাটকীয় চরিত্রে পিতা-পুত্রকে বলেছিল, পিতার চরিত্রে রজনী ও পুত্র চরিত্রে কালিনাথ।
প্র, মেঘ মদির মহুয়ার দেশ কোথায় আছে ?
উ, অনেক, অনেক দূরে আছে মেঘ মদির মহুয়ার দেশ।
প্র, ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া গেছে যে মেয়েটির, সে কি ছিল ?
উ, সে নিখোঁজ ছিল।
প্র, বৃক্ষ বাসেনি কাকে বলা হয়েছে ?
উ, সৈয়দ মোস্তফা সিরাজের লেখা ভারতবর্ষ গল্প বৃক্ষ বাসেনি বুড়ি মাকে বলা হয়েছে।
প্র, “ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরেফিরে আসে” ধোঁয়াটা কিসের প্রতীক ?
উ, “ধোয়া” হলো শীতের দুঃস্বপ্নের প্রতীক।
প্র, ‘গল্পটা আমাদের ইস্কুলে শোনানো হল’ গল্পটা কোথা থেকে নেওয়া হলো ?
উ, কর্তার সিং দুগগাল এর অলৌকিক গল্পে দেখা যায়।
প্র, কান্ত কবি নামে খ্যাত কে ?
উ, জাতীয় কবি রজনীকান্ত সেন।
প্র, ‘বহুরূপী তখন লাটে উঠবে বহুরূপী লাটে উঠবে’ বহুরূপী লাটে উঠবে কেন এটা কোন নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উ, বিভাব – নাটকের চরিত্রের অবলম্বনে নাট্য অভিনয়ের জন্য লাটে উঠবে, লাট বলতে নাটক মঞ্চকে বোঝানো হয়েছে, বিভাব নাটকটি শম্ভু মিত্র পরিচালিত বহুরূপী নাট্য গোষ্ঠীর একটি অসামান্য উপস্থাপনা।

প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান ৫

প্র, “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে না-ই যদি হয় ক্রোধ…” – কবি কাকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেছেন। কবির প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করো।

● উত্তর – ‘কুন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় ‘ভাই’ বলতে কৃষিজমি রক্ষার গণ
আন্দোলনে শহিদ মানুষদের কথা বুঝিয়েছেন।
● “নিহত ভাইয়ের শবদেহ’ কবির মনে জন্ম দিয়েছে তীব্র ক্রোধের। এই হত্যা আর মানবিক লাঞ্ছনায় ব্যথিত হয়ে তিনি নিজের দেশমাতাকে কাঁদতে দেখেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, এই দুঃসময়ে ক্রন্দনরতা জননীর পাশে সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়ানো উচিত। এখন লেখা, গান বা আঁকাআঁকি সব কিছুরই বিষয় হওয়া উচিত এই লাঞ্ছনার প্রতিবাদ। মনের মধ্যে যদি ভালোবাসা থাকে, সামাজিক চেতনা থাকে, মূল্যবোধের অস্তিত্ব থাকে তাহলে ক্রোধ আর প্রতিবাদই হওয়া উচিত একমাত্র অস্ত্র। এভাবেই মৃদুল দাশগুপ্ত তৈরি করে নেন তাঁর নিজস্ব কবিধর্ম, যেখানে কবিতাই হয়ে ওঠে জাগ্রত বিবেকের আত্মপ্রকাশ। সমাজের ঘটনাপ্রবাহকে অনুধাবন করে নিবিড়ভাবে তার সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন কবি। সেগুলিকে বিশ্লেষণ করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর কবিতায়। বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা নয়, এমনকি বাস্তবকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করাও নয়, পরিবর্তে সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়ে তার মোকাবিলা করা—মৃদুল দাশগুপ্তের প্রতিক্রিয়ার এই ধরনই স্পষ্ট হয় ‘কুন্দনরতা জননীর পাশে কবিতায়।

প্র, ‘নানা রঙের দিন নাটক অবলম্বনে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
অথবা, ‘নানা রঙের দিন’ নাটকে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের যে নিঃসঙ্গতা ও একাকিত্বের ছবি ফুটেছে আলোচনা করো।

● উত্তর – অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ নাটক ‘নানা রঙের দিন’-এ আটষট্টি বছরের প্রবীণ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ই মুখ্য চরিত্র। নাটকটিতে দর্শকশূন্য প্রেক্ষাগৃহে কখনও একা, কখনও প্রম্পটার কালীনাথ সেনের সঙ্গে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রজনীকান্ত যে কথাবার্তা বলেছেন, তা থেকে তাঁর চরিত্রের দুটি দিক উন্মোচিত হয়েছে। কখনও ব্যক্তি রজনীকান্ত, কখনও অভিনেতা রজনীকান্তের জীবন উঠে এলেও শেষপর্যন্ত একই সুতোয় গাঁথা হয়েছে এই দুটি জীবন।

ব্যক্তি রজনীকান্ত: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় পারিবারিক সূত্রে রাঢ়বাংলার সবংশজাত ব্রাহ্মণ। যৌবনে সুপুরুষ রজনীকান্ত শুধুমাত্র অভিনয়ের নেশায় পুলিশের চাকরিতে ইস্তফা দেন। অভিনয়ের কারণেই প্রেমিকার সঙ্গেও তাঁর বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে তিনি বুঝতে পারেন তিনি একজন নিঃস্ব, রি, একাকী মানুষ। বিশাল পৃথিবীতে কোনো স্বজন না থাকার মানসিক যন্ত্রণায় ক্রমাগত বিদ্ধ হতে থাকেন তিনি।

অভিনেতা রজনীকান্ত: পঁয়তাল্লিশ বছর থিয়েটারে জীবন কাটানোর পর রজনীকান্ত জীবনের প্রাপ্তসীমায় দাঁড়িয়ে পুরোনো স্মৃতির মধ্যেও আনন্দ খুঁজেছেন। ‘রিজিয়া’ নাটকের বক্তিয়ার কিংবা ‘সাজাহান’ নাটকের ঔরঙ্গজেবের সংলাপ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে তিনি যেন অভিনেতা রজনীকান্তকে জীবিত রাখতে চেয়েছেন। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই আবার হতাশা গ্রাস করেছে তাঁকে। ক্রমশ ক্ষয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা তাঁকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। তাঁর মনে হয়েছে যে, তিনি আসলে একা, কারণ সমাজজীবনে অভিনেতার কোনো স্বীকৃতি নেই।

প্র, ‘নানা রঙের দিন’ নাটকে প্রম্পটার কালীনাথ সেনের চরিত্র আলোচনা করো।

● উত্তর – অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ-নাটক ‘নানা রঙের দিন’-এ কালীনাথ সেন হলেন থিয়েটারের প্রম্পটার, যাঁর বয়স ষাটের কাছাকাছি। গভীর রাতে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় যখন নেশার ঘোরে বুঁদ হয়ে একা মঞ্চে অসংলগ্ন আচরণ করছেন, তখনই ময়লা পাজামা পরে, কালো চাদর গায়ে এলোমেলো চুলের কালীনাথ সেনের মঞ্চে প্রবেশ ঘটে।

আশ্রয়হীন কালীনাথের ব্যক্তিগত জীবনও রজনীকান্তের মতো বা তার থেকেও দুঃখের। কিন্তু সারাজীবনের সমস্ত হতাশা, না-পাওয়া, আক্ষেপের সঙ্গে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। আর এখানেই রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য। গভীর রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় যখন রাশ হতাশা ঝরে পড়ে, তখন কালীনাথবাবু তাঁকে বারেবারে পুরোনো দিনের কথা না ভাবার পরামর্শ দেন।
প্রম্পটার কালীনাথও যে নাটকের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এক ব্যক্তিত্ব, তা বোঝা যায় যখন রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি মঞ্চের উপরে অনায়াস দক্ষতায় ‘সাজাহান’ নাটকে মহম্মদের সংলাপ থেকে শুরু করে দক্ষতার সঙ্গে বলে যান।

কালীনাথের চরিত্রে মানবিকতার প্রকাশ দেখা যায়। হতাশ এবং অবসাদগ্রস্ত রজনীকান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। গভীর রাতে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিতেও চেয়েছেন। “আপনার প্রতিভা এখনও মরেনি…”—এই কথার মাধ্যমে তিনি হতাশ রজনীকান্তকে পুনরুজ্জীবিত করতে চেয়েছেন। এককথায় বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্তের চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলায় পার্শ্বচরিত্র হিসেবে প্রম্পটার কালীনাথ সেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন।

প্র, “বইয়ে লেখে রাজার নাম। | রাজারা কি পাথর ঘাড়ে করে আনত।”—কারা, কেন পাথর ঘাড়ে করে এনেছিল ?

● উত্তর – শঙ্খ ঘোষ-কৃত বের্টোল্ট ব্রেখটের কবিতা ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ থেকে প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি গৃহীত হয়েছে। প্রাচীন মিশরের নগররাষ্ট্র থিবসের নির্মাণকারীর নাম উল্লেখ করতে গিয়ে কবি এই উদ্ধৃতিটির অবতারণা করেছেন। থিবস নগররাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য সে রাজ্যের মজুরদেরই পাথর ঘাড়ে করে আনতে হয়েছিল।

পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা যে সবচেয়ে বেশি—সেই সত্য প্রতিষ্ঠা করতেই ব্রেখট্ কবিতাটি লিখেছেন। প্রচলিত ইতিহাসে রাজারাজড়া এবং সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের যাবতীয় কীর্তি এবং বিজয়কেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সমাজের বিত্তবান শ্রেণি এবং উঁচুতলার মানুষরাই সেই ইতিহাসকে নিয়ন্ত্রণ করেন। অথচ তার আড়ালে থাকা শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা চিরকাল উপেক্ষিতই থেকে যায়। কবি এই কবিতায় সোচ্চারে জানিয়েছেন, শ্রমিক শ্রেণিই হল ইতিহাসের প্রকৃত কারিগর। প্রাচীন মিশরে সাত-তোরণবিশিষ্ট একটি নগররাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল। প্রাচীন গ্রিসের ‘থেবাই’ শহরের অনুকরণে তার নামকরণ হয়েছিল ‘থিস্’। এর গড়ে ওঠা সম্ভব
হয়েছিল প্রমজীবী মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই। আক্ষরিক অর্থেই, থিস্ নগরী নির্মাণ করেছিলেন সে যুগের শ্রমিকরাই, রাজা নন কখনোই শুধু তাই নয়, ব্যাবিলনের পুনর্নির্মাণ, লিমা নগরী নির্মাণ, চিনের প্রাচীর নির্মাণ
প্র, ‘গারো পাহাড়ের নীচে’ যারা বাস করে তাদের জীবনযাত্রার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

● উত্তর – সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আমার বাংলা গ্রন্থের ‘গারো পাহাড়ের নীচে রচনায় সেখানকার মানুষদের জীবনযাত্রার এক স্পষ্ট ও নিখুঁত বর্ণনা পাওয়া
যায়। গারো পাহাড়ের নীচের সুসং পরগনায় বাস করে হাজং গারো-কোচ-বানাই ডালু-মার্গান প্রভৃতি নানা সম্প্রদায়ের মানুষ এখানকার প্রথম বাসিন্দা হাজংরা ছিল চাষবাসে খুব দক্ষ। তাই গারোরা এদের নাম দিয়েছিল হাজং—অর্থাৎ, চাষের পোকা। গারোদের ঘরগুলো মাচা করে বাঁধা, তার ওপরেই খাওয়া শোওয়া-রান্নাবান্না-হাঁসমুরগির থাকার ব্যবস্থা।
চাষের সময় গারো পাহাড়ের নীচে দিগন্তজোড়া ধানের খেতে নারীপুরুষ কাস্তে হাতে ধান কাটতে ছোটে। ছোটো ছেলেরা পিঠে ধানের আঁটি বেঁধে এনে খামারে ভরে। কিন্তু এখানকার মানুষদের জীবনে দুষ্টু শনির মতোই লুকিয়ে থাকে জমিদারের কুনজর। পরিশ্রম করে ফলানো ফসলের সামান্য অংশই তারা ভোগ করতে পারে, বেশিরভাগটাই নিয়ে চলে যায় জমিদারের পাহক বরকন্দাজ।
আগে হাতি-বেগার আইনের কারণে জমিদারের হাতি শিকারের সময় ॐ জঙ্গল ঘিরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হত গ্রামের মানুষদের। প্রজাবিদ্রোহের ফলে সে আইন বাতিল হলেও দুর্দশা কাটেনি তাদের।
অনেক বছর আগে একসময় এখানকার মানুষগুলোর খেয়েপরে বেঁচে থাকতে কোনো অসুবিধাই হত না। কিন্তু দিনের পর দিন জমিদারের অত্যাচারে ও শোষণে আজ তাদের দুমুঠো ভাত কিংবা একফোঁটা দুধও জোগাড় করতে হয় চেয়েচিত্তে।
অবিভক্ত বাংলা দেশে থাকলেও বাঙালি জীবনযাত্রার সাথে এরা কখনও নিজেদের মেলাতে পারেনি, আর বাঙালিরাও তাদের আপন করে নিতে পারিনি।

প্র, পট শব্দের অর্থ কী ? পট শিল্পে যামেনী রায়ের অবদান আলোচনা করো।

● উত্তর – পট শব্দের অর্থ চিত্র, বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী যামিনী রায়। গ্রামে মাটির মূর্তি-শিল্পীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েই তাঁর শিল্পীজীবনের সূচনা হয়। গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে শিক্ষাগ্রহণ করার পর তিনি ফাইন আর্ট বিভাগে ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতির চিত্রবিদ্যা শেখেন। ১৯১৮-১৯ থেকে তাঁর ছবি ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টের পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। গ্রামবাংলার নিসর্গচিত্র, আদিবাসী জীবন ও জীবিকা, ধর্মীয় সম্প্রদায়িকতা ও ধর্মকাহিনিনির্ভর ছবি আর পটচিত্র অঙ্কনে তিনি ছিলেন অনবদ্য। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ছবি সর্বভারতীয় প্রদর্শনীতে ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক লাভ করে। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন। আর্ট স্কুলে গিলার্ডি সাহেবের কাছে তেলরঙে আঁকায় অভ্যস্ত হয়ে উঠলেও পরবর্তীকালে যামিনী রায় জলরঙে অসামান্য সব ছবি এঁকেছেন। কালীঘাটের পটুয়াদের শৈলীর দ্বারা তিনি বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। ফরাসি চিত্রধারার মধ্যে যাঁরা সরলরেখার পরিবর্তে ছবিতে ‘কার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের চিত্রকলা তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। সেজান, ভ্যান গগ আর গন্ধ্যার মতো পোস্ট ইমপ্রেশনিস্ট শিল্পীদের ছবি দেখে তিনি আকৃষ্ট হয়েছেন। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে তাঁর মূল লক্ষটিকে তিনি নিজেই নির্দিষ্ট করেছেন, তা যেন ‘অন্য সকলের ছবির থেকে আলাদা হয়— তা সে ভালোই হোক বা মন্দই হোক।’ পরবর্তী শিল্পীদের অনেকেই তাঁর দেখানো পথে নিজের নিজের চিত্রভাষা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।

প্র, বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলোচনা করো।

● উত্তর – ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের বিক্রমপুর জেলার রাড়িখাল গ্রামে জগদীশচন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেন। জগদীশচন্দ্র কলকাতায় এসে টিভ প্রথমে হেয়ার স্কুলে, পরে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করে ভরতি হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। কলেজে পড়াকালীন সুখ্যাত অধ্যাপক ফাদার লাফোর সংস্পর্শে এসে তাঁর কাছ থেকেই জগদীশচন্দ্র প্রকৃতিবিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব হাতেকলমে পরীক্ষার দ্বারা আয়ত্ত করেন। পিতার ইচ্ছানুসারে দেশসেবার জন্য জগদীশচন্দ্র বিজ্ঞানী হওয়ার সংকল্পে কেমব্রিজে গিয়ে ক্রাইস্টান কলেজে ভরতি হন। চার বছর বিলেতে থেকে বি এসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও উদ্ভিদবিদ্যায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করে দেশে ফেরেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার সময় থেকেই তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে দেশীয় কারিগর দিয়ে নিজ ব্যয়ে যন্ত্রপাতি তৈরি করান। ক্রমে আকাশস্পন্দন ও আকাশসম্ভব জগৎ, বিদ্যুৎ বি রশ্মির দিক পরিবর্তন, বিদ্যুৎ তরঙ্গ সৃষ্টি, বিনা তারে সংবাদপ্রেরণ, এক্স-রে, কাচ ও বায়ুর রশ্মিপথ পরিবর্তন করার শক্তি, জীব ও জড় পদার্থের উপর কি বিদ্যুৎ রশ্মিপাতের ফলের ক্ষমতা, জড় ও জীবের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা প্রভৃতি বিে বিচিন্ন বিষয়ে পৃথিবীর নানা গবেষণাগারে মূল্যবান গবেষণা করেন। এ ছাড়াও সৃষ্টি তিনি দীর্ঘকাল উদ্ভিদ ও প্রাণীর পেশির তুলনামূলক গবেষণা করেন। তাঁর লেখা বিজ্ঞানবিষয়ক গ্রন্থগুলি হল— Physiology of Ascent of Sap Physiology of Photosynthesis, Nervous Mechanism of Plants, Growth and Tropic Movements of Plants ইত্যাদি | বাংলায় লেখা তাঁর বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধগুলি অব্যক্ত গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অবসর নিয়ে তিনি বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নভেম্বর গিরিডিতে এই কর্মবীর বিজ্ঞানসাধকের মহাপ্রয়াণ ঘটে।

This Post Has 3 Comments

  1. Mujib

    Good vibes

  2. Abu Raihan khan

    I benefited, thank you bro

Leave a Reply