- ভূমিকা :
- মনুষ্যত্ব বিকাশে বইমেলা :
- বইমেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :
- ভারতে বইমেলা :
- বাংলার বইমেলা :
- মিলন মেলা :
- বইমেলার বৈশিষ্ট্য :
- বইমেলার গুরুত্ব :
- উপসংহার :
ভূমিকা : বই এর চেয়ে ভালো বন্ধু আর নেই, কথাটা খুবই সত্যি। জগতের যত নদী গিরি সিন্ধুি মরু কত অচেনা অজানা
উদ্ভিদ জীবজন্তুর,মানুষের কত কীর্তি-কাহিনি আমাদের আগোচরে চলে থেকে যায়। সেই অজ্ঞাত বিষয়কে আমাদের চোখের সামনে মেলে
ধরে বই প্রকৃত বন্ধুর কাজে করে। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে বইমেলার আসর বসে।
বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বনের মধ্যে বইমেলা আজ অন্যতম প্রধান উৎসব।

মনুষ্যত্ব বিকাশে বইমেলা : বইমেলা মনুষ্যত্ব বিকাশের এক গুরুত্ব পূর্ণ মাধ্যমে। বই না পড়লে মর্যাদাবোধ জন্মায় না।
শিক্ষিত মানুষের বেচে থাকার অন্যতম রসদ হল বই। বই হল বিশ্বাসযোগ্য আয়নার মতো, যাতে আমাদের মনের প্রতিবিম্ব ধরা পড়ে।
অজানাকে জানার চাহিদা মেটাতে পারে বই। শিশু কিশোরের কাছে বই দিকশনের কাজ করে। বইমেলা বইপ্রেমী মানুষের মিলনতীর্থ।

বইমেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : বই মেলার ঐতিহ্য অবশ্য খুবই প্রাচীন। যতদূর জানা যায় এর শুরু এয়োদশ শতকে।
পঞ্চদশ শতকের শেষার্ধে ইংল্যান্ডে ও সপ্তদশ শতকের প্রথমার্ধে জামানীতে এবং উনিশ শতকের শুরুতে আমেরিকার নিউইয়াকে পুস্তক মেলার আয়োজন হয়েছিল।
ভারতে বইমেলা : ‘ন্যাশনাল বুকট্টস্ট’ ১৯৬৯ খ্রীঃ মুম্বাই শহরে যে বই মেলার ব্যবস্থা করে তাই সম্ভবত ভারত
অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় গ্রন্থ মেলা। এই বুক ট্রাষ্টের উদ্যোগে দিল্লীতে শুরু হয় প্রথম বিশ্ব বই মেলা।
মাদ্রাজে ১৯৭৪ সালে একই উদ্দ্যোগে বই মেলার উদ্ভব হয়।

বাংলার বইমেলা : পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা ময়দান এখন প্রতিবছর শীতকালে কলকাতা বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
কলকাতা বইমেলা ১৯৭৫ খ্রীঃ শুরু হওয়ার পর প্রতি বছর সমান উৎসাহ ও সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হচ্ছে।
তবে এই বইমেলা কলকাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এখন হাওড়া বর্ধমান বাকুঁড়া, পুরুলিয়া প্রভৃতি জেলা গুলিতে বিস্তার লাভ করেছে।
সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে বসিরহাট ও বেড়াচাঁপার বইমেলার কথা উল্লেখ করা যায়।
এই মেলা উপলক্ষ্যে প্রতিদিন সেখানে বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন হয়ে থাকে।

মিলন মেলা : বইকে কেন্দ্র করে বই মেলা প্রাঙ্গনে এক সামাজিক মেল বন্ধন গড়ে উঠতে দেখা যায়।
বইমেলায় প্রকাশক এবং পুস্তক বিক্রেতারা বিশ্বের নানা প্রান্তের নানা বিষয়ের বই এনে বিভিন্ন রুচির মানুষের সামনে হাজির করেন।
তাই বইপ্রেমী মানুষ বই মেলায় এসে বিভিন্ন বইয়ের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।

বইমেলার বৈশিষ্ট্য : বই মেলা অবশ্য অন্যান্য ধর্মীয় বা গ্রামীন মেলার মতো শুধু আনন্দ, গান, গোলমাল, খাবার, নাগরদোলা,
সার্কাস ইত্যাদি বিচিত্র বিনোদনের ব্যবস্থা নয়। এ শুধু বইয়ের মেলা, যা একটি বিশুদ্ধ সাংস্কৃতিক উদ্যোগ।
নতুন বইয়ের গন্ধের সঙ্গে যেন পাঠক নবর্জিত জ্ঞানের আশ্বাস পেয়ে উজ্জীবিত হয় বই মেলায়।
বইমেলার গুরুত্ব :
- ক) বইমেলার মাধ্যমে বিভিন্ন বই দেখা জানা এবং পরস্পরকে বই উপহার দেওয়ার মধ্যে দিয়ে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
- খ) মঞ্চে মঞ্চে কবিদের কবিতা পাঠ এবং স্টলে স্টলে কবি সাহিত্যিকদের নিজের চোখে দেখা ও আলাপ করার সুযোগ।
- গ) পুরাতন ও নতুন প্রকাশকদের সদ্য প্রকাশিত বিভিন্ন বই পাওয়া যায়।
- ঘ) বিভিন্ন ভাজাভুজির দোকান, মিষ্টির দোকান, খেলনার দোকান ইত্যাদিকে ঘিরে বহু মানুষ অর্থ উপার্জন করে।

উপসংহার : বইমেলাকে কেন্দ্র করে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের বই কেনা ও পড়ার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।
নবীন লেখকদের রচনা প্রকাশিত হয় এই মেলায়। এছাড়া এই মেলা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন শিল্পী তাঁদের সৃষ্টি নিয়ে উপস্থিত হন।
এই ভাবে বই মেলা এক মিলন মেলা হয়ে ওঠে।