ঈদের নামায পড়তে হয় বৎসরে মাত্র দুইবার, অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়মকানুন একটু ভুলিয়ে ফেলেন। ফলে নামাযের মধ্যেই এদিক সেদিক তাকাতাকি করেন অনেকেই। যার ফলে নামায ভেঙ্গে যাবে। অনেকেই কখন হাত বাঁধবেন, কখন হাত না বেঁধে ছেড়ে দেবেন এটা নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন, এমনকি অনেকে একবার ডানপাশের লোকেরটা অনুসরণ করেন আরেকবার বামপাশের লোকেরটা অনুসরণ করেন। অথচ বিষয়টা খুবই সহজ। তাই আজকে জানবো, ঈদুল-আযহা নামাজের নিয়ম ও নিয়ত।
হাত বাঁধা বা ছাড়া নিয়ে সমস্যা।
ঈদুল ফিতরের নামাজের মত ঈদুল আযহার নামাজ দু-রাকাত। ছয় তাকবির।
তাকবীরে তাশরীক।
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْد
Allahu Akbar, Allahu Akbar, La Ilaha Ilallahu Wallahu Akbar, Allahu Akbar, Wa Lillahil Hamd.
বাংলা উচ্চারণ।
‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ’।
তাকবীর (تكبير) অর্থ হলো- বড়ত্ব ঘোষণা করা। আর তাশরীক (التشريق) অর্থ হলো- সূর্যের তাপে গোশত শুকানো।
তাকবীরে তাশরীক تكبير التشريق এর অর্থ -সূর্যের তাপে গোশত শুকানোর বড়ত্ব ঘোষণা করা। আরবগণ তাদের কুরবানীর গোশত ঈদের তিনদিন পর পর্যন্ত রোদে শুকাতো, এজন্য এ দিনগুলো আইয়ামে তাশরীক বলা হয়।
তাকবীরে তাশরীক হলো কয়েকটি বিশেষ বাক্যের সমন্বিত রূপ। এতে রয়েছে ০৪ বার তাকবীর, ০১ বার তাহলীল এবং ০১ বার তাহমীদ।
তাকবীরে তাশরীক কখন পড়তে হয়।
আরাফার দিন অর্থাৎ জিলহজের ৯ তারিখ ফজর থেকে জিলহজের ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর সালাম ফেরানোর সাথে সাথে উচ্চস্বরে একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। মেয়েরা এ তাকবীর নিুস্বরে পড়বে। হিসেব কষলে মোট ২৩ওয়াক্ত নামায হয়, যার পর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। আর এ ৫ দিন যেহেতু তাকবীর বলা হয় সেহেতু এ দিনগুলোকে আইয়ামে তাশরীক বলে। (দুররুল মুখতার )
তাকবীর সম্পর্কে মাসআলা।
- ০৯ জিলহজ ফজর হতে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পরক্ষণেই অনতিবিলম্বে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব।
- উক্ত দিনসমূহে প্রত্যেক ফরয নামাযের পর প্রত্যেক মুসলমান, চাই সে গোলাম হোক, কিংবা স্বাধীন হোক, মুসাফির হোক, কিংবা মুকীম হোক, একাকী আদায়কারী হোক কিংবা জামায়াতে আদায়কারী হোক- সবার জন্য তাকবীরে তাশরীক ওয়াজিব।
- পুরুষগণ তাকবীরে তাশরীক জোরে বলবে।
- মহিলাগণ তাকবীরে তাশরীক আস্তে বলবে।
- মাসবুক ব্যক্তি(যে শুরু থেকে ইমামের অনুসরণ করতে পারেনি।) নিজ নামায শেষ করার পর তাকবীরে তাশরীক পাঠ করবে।
- ইমাম তাকবীর বলতে ভুলে গেলে ও মুক্তাদীর তাকবীর বলা ওয়াজিব।(ফাতওয়ায়ে শামী ১ম খন্ড ৭৭৭ পৃষ্ঠা)
- মাসবুক তার নামায আদায় করে তাকবীর বলবে। (ফাতাওয়ায়ে শামী ১ম খন্ড-৭৮৬পৃষ্ঠা)
- যদি মুসল্লী ফরয নামাযের পর তাকবীর বলতে ভুলে যায়। এবং কিছু কাজ করে ফেলে যার দ্বারা নামায নষ্ট হয়ে যায়, (যেমন মসজিদ থেকে বাহির হয়ে যাওয়া, অথবা ভূলে বা ইচ্ছায় কথা বলা অথবা ইচ্ছা করে অজু ভঙ্গ করা) তবে তার উপর থেকে তাকবীর বলা রহিত হয়ে যাবে।(ফাতাওয়া শামী ১ম খন্ড, ৭৮৬ পৃষ্ঠা)
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। মুসলমানরা প্রতি বছরে দুটি ঈদ উদযাপন করে থাকেন। এই দিনগুলোতে ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। অনেকেই হয়তো জানেন না ঈদুল আযহার(Eid al Adha) নামাজ কীভাবে আদায় করতে হয়। ঈদুল আযহার নামাজ অন্যান্য নামাজের মতোই আদায় করতে হয়। এ নামাজে রুকু, সিজদা, তাশাহুদ সবই আছে। ঈদের নামাজ দুই রাকাত। যা আদায় করা ওয়াজিব এবং তা জামাআতে আদায় করতে হয়। শুধু মাত্র অতিরিক্ত ছয় তাকবির দিতে হয়।
ঈদুল আযহা নামাযের নিয়ত।
نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ
বাংলা উচ্চারণ।
নাওয়াইতুআন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকআতাই ছালাতিল ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবিরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
নামাজের বাংলা নিয়ত।
আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল আযহার দু’ রাকআত ওয়াজিব নামায পড়তেছি আল্লাহু আকবার।
অনেকের ধারণা নামাজের নিয়ত আরবিতে করা জরুরি। এমনটি ঠিক নয়। যে কোনো ভাষাতেই নামাজের নিয়ত করা যায়।
হাত বাঁধা বা ছাড়া নিয়ে সমস্যা।
এই দুইটা বিষয় মনে রাখলে হাত বাঁধা বা ছাড়া নিয়ে কোন সমস্যা আর থাকবে না।
১. যে তাকবিরের পরে সূরা/ছানা পড়তে হয় সেই তাকবিরের পর হাত বাঁধতে হয়।
২. যে তাকবিরের পরে সূরা/ছানা পড়তে হয় না, সেই তাকবিরের পর হাত বাঁধতে হয় না।
প্রথম রাকাত।
প্রথমেই- তাকবিরে তাহরিমা- ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধবেন। ইমাম ও মুসল্লিরা নিয়ত বাঁধার পর ছানা অর্থাৎ এ দোয়াটি পড়বে-
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ ﴿﴾ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ ﴿﴾ وَتَعَالَى جَدُّكَ ﴿﴾ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক। (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)
অর্থ : “হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।”
তারপর ইমামের উচ্চস্বরে তাকবির বলার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিরাও তাকবির বলবেন।
প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবির বলার সময় উভয় হাত কান বরাবর ওঠিয়ে ছেড়ে দিবেন।
তৃতীয় তাকবিরের সময় উভয় হাত কান বরাবর ওঠিয়ে না ছেড়ে হাত বাঁধবেন। এরপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা এবং অন্য সুরা মিলিয়ে রুকু, সিজদা করবেন; মুসল্লিরাও ইমামের সঙ্গ রুকু সিজদা করবেন।
• তাকবিরে তাহরিমা (১ম তাকবির)।
• হাত বাঁধা (কারণ এর পর ছানা পড়তে হবে)।
• ছানা পড়া।
• ১ম অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
• হাত ছেড়ে দেওয়া।
• ২য় অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
• হাত ছেড়ে দেওয়া।
• ৩য় অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
• হাত বেঁধে ফেলা (কারণ এর পর সূরা পড়া হবে)।
• সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা মিলানো।
• তাকবির দেওয়া।
• রুকু করা।
• রুকু থেকে দাঁড়ানো।
• সিজদায় যাওয়া।
• ২টি সিজদা করা।
• তাকবির দেওয়া (২য় রাকাতের জন্য)।
দ্বিতীয় রাকাত।
ইমাম সাহেব দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা মিলানোর পর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে অতিরিক্ত তিন তাকবির প্রথম রাকাতের মতোই আদায় করবেন। অতপর রুকু-সিজদা করার পর অন্যান্য নামাজের মতোই সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করবেন।
• হাত বেঁধে দাঁড়ানো।
• সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা মিলানো।
• ৪র্থ অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
• হাত ছেড়ে দেওয়া।
• ৫ম অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
• হাত ছেড়ে দেওয়া।
• ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
• হাত না বাঁধা।
• রুকু করা।
• রুকু থেকে দাঁড়ানো।
• সিজদায় যাওয়া।
• ২টি সিজদা করা।
• শেষ বৈঠক + সালাম ফিরানো।
খুৎবাহ শোনার নিয়ম ও গুরুত্ব।
ছালাতের পর খুৎবা দেওয়া ও তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করা সুন্নাত,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদায়নের ছালাত শেষে দাঁড়িয়ে কেবলমাত্র একটি খুত্বা দিয়েছেন, যার মধ্যে আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, তাকবীর, দো’আ সবই ছিল।
ইবনু মাজাহ কর্তৃক যঈফ সনদে রাসূলের মুওয়াযযিন সা’দ আল-কারায (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদায়নের খুৎবার মধ্যে বেশী বেশী তাকবীর ধ্বনি করতেন’।
এ সময় মুছল্লীগণ ইমামের সাথে সাথে তাকবীর ধ্বনি করবেন’। এটি কুরআনী নির্দেশের অনুকূলে । কেননা ছিয়াম ফরয করার উদ্দেশ্য বর্ণনায় আল্লাহ বলেন, । লাঁচ এক ঊর্ভ না এটা এজন্য যে, তোমরা আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করবে একারণে যে, তিনি তোমাদেরকে সুপথ প্রদর্শন করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/১৮৫)।
অনেক মুছল্লী খুৎবার সময় অন্যদিকে মনোযোগ দেন, অনেকে চলে যান, অনেক ঈদগাহে খুৎবার সময় পয়সা তোলা হয়, এগুলি খুত্বা অবমাননার শামিল।
কেননা খুৎবার সময় অন্য কাজে লিপ্ত হওয়া, পরষ্পরে কথা বলা, এমনকি অন্যকে ‘চুপ কর’ একথা বলাও নিষেধ।১০৯ সবচেয়ে বড় কথা, ঐ ব্যক্তি খুৎবা শোনার ছওয়াব ও বরকত থেকে মাহরূম হয় এবং সুন্নাত ভঙ্গ করার জন্য গোনাহগার হয়।
ঈদুল আযহার দিনের সুন্নাত।
ঈদুল আযহার সুন্নাতসমূহ যেমন –
- ঈদুল আযহার দিনে কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নাত(পশু জবাই না হওয়া পর্যন্ত কিছু না খাওয়া-যিনি কুরবানি দেবেন।
- ঈদুল আজহার দিনে ঈদগাহে যাওয়া ও প্রত্যাবর্তনের সময় তাকবির (আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ) উচ্চস্বরে পড়া সুন্নাত।
- ঈদুল আজহার নামাজ ঈদুল ফিতর অপেক্ষা অধিক সকালে পড়া সুন্নাত।
- ঈদুল আজহার নামাজের পর সক্ষম ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব।
- ঈদুল আজহা বা ঈদুল ফিতরের নামাজের কোনো আযান বা একামত নেই।
- ঈদের নামাজ কাযা পড়ার নিয়ম নেই।
- ঈদের নামাজ সহীহ হবার জন্য জামা’আতে আদায় করা শর্ত।
কোরবানির ফজিলত কী ?
একদা হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রাসুলের (সা.) নিকট জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি কী ?
উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করলেন– কোরবানি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনাদর্শ।
সাহাবি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন- কোরবানির ফজিলত কী ?
রাসুল (সা.) বললেন, পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেয়া হয় (মেশকাত: ১২৯)। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানিদাতার কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তার অতীতের সকল গুনাহ মোচন করে দেয়া হয় (তিরমিজি: ১/১৮০)। মহানবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, তোমরা মোটাতাজা পশু দেখে কোরবানি কর, কারণ এ পশুই পুলসিরাতের বাহক হবে (মুসলিম: ২৬৩৯)।
কোরবানির দোয়া।
কোরবানিদাতা নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করবেন, যদি তিনি ভালোভাবে জবাই করতে পারেন। কেননা, রাসুলুল্লাহ (স) নিজে জবাই করেছেন। আর পশু কোরবানি করা আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের একটি মাধ্যম। এই কোরবানির সময় বাঞ্ছনীয় বিষয় হচ্ছে দোয়া পড়া।
কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত করে কিবলার দিকে ফিরালে, জবাই করার সময় ও জবাই শেষে বিভিন্ন দোয়া পড়তে হয়। তাহলে ঈদুল আযহার দোয়া পড়ার সুন্নত আদায়ের পাশাপাশি সওয়াবও লাভ হয়।
কোরবানি পশু কিবলার দিকে ফিরিয়ে যে দোয়া পড়বে
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ اِبْرَاهِيْمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ، بسم الله الله أكبر.
উচ্চারণ : ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা আলা মিল্লাতি ইবরাহিমা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা।
অর্থ : নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ—সবই বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি এ কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আর আমি আত্মসমর্পণকারীদের একজন। আল্লাহর নামে, আল্লাহ সবচেয়ে মহান।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২১).
পশু জবেহ করার সময় এই দোয়া পড়বেন।
اللهم مِنكَ وَلَكَ
আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।
অর্থ : হে আল্লাহ, (এই কোরবানির পশু) তোমার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এবং তোমারই জন্য উৎসর্গকৃত।
এরপর بسم الله الله أكبر পড়বে।
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার
অর্থ : মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
জবেহ করার পর এই দোয়া পড়বে
اللهم تقبل منا كما تقبل من حبيقك محمد وخليلك إبراهيم عليه السلام
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিন ওয়া খলিলিকা ইবরাহিমা আলাইহিমাস সালাম।’
অর্থ : হে আল্লাহ, এই কোরবানি আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন, যেভাবে আপনি তা কবুল করেছিলেন আপনার প্রিয় বন্ধুদ্বয় মুহাম্মদ (সা.) ও ইবরাহিম (আ.)-এর পক্ষ থেকে। (মেশকাত : ১/১২৮)
যদি কেউ একাকি কুরবানি দেয় এবং নিজে জবাই করে তবে বলবে মিন্নি; আর অন্যের কুরবানির পশু জবাই করার সময় ‘মিনকা-মিনকুম’ বলে যারা কুরবানি আদায় করছে তাদের নাম বলা।