- ভূমিকা :
- গাছের ব্যবহার :
- বৃক্ষ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা :
- ভারতের অরন্যভূমি:
- প্রাচীন ভারতের গাছপালার সাথে মানুষের সম্পর্ক :
- বৃক্ষরোপন কর্মসূচী :
- উপসংহার :

ভূমিকা : পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির আগেই গাছের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ তার সৃষ্টিলগ্ন থেকে গাছের কাছে থেকে বহু উপকার পেয়ে আসছে।
গাছ মানব সমাজের অস্তিত্ব পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
মানব সভ্যতার ইতিহাস পড়লে জানতে পারি, অরন্য মানব সভ্যতার আদি লালনভূমি।
বিভিন্ন বৃক্ষ সমৃদ্ধ অরন্যের কাছ থেকে মানুষ পেয়েছে আশ্রয়, ক্ষুধার উপকরণ ও নান রোগের ঔষধ।

গাছের ব্যবহার : দৈনন্দিন জীবন গাছপালা মানুষের জীবনের সাথে একটা নিবির বন্ধনে আবদ্ধ।
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন, আর গাছই এক অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে আমাদের শ্বাস পাশ্বাসে সাহায্য
করার সাথে সাথে বাতাসে অক্সিজেনের ভারসাম্যকেও বজায় রাখে। এছাড়া গাছ আমাদের ওষধ পত্র, আসবাব পত্র দিয়ে থাকে।

বৃক্ষ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা : গাছের উপযোগতিার কথা মানে রেখে বন সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপনের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে জ্বালানির প্রয়োজনে, নাগরিক সভ্যতার বিকাশে ও জনস্ফীতির দরুন প্রতি বছর যে পরিমান গাছ
কাটা হয় তা অদূর ভবিষ্যতে মানব জাতিকে বিপয়ের সম্মুখীন করবে। একমাত্র গাছপালা আমাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে।
এছাড়া জ্বালানি, খাদ্য, ফল যেমন গাছ যোগন দেয় তেমনি পুজো আর সৌন্দর্যের উপকরন হিসাবে ফুল,
পাতা আমরা গাছ থেকে পেয়ে থাকি। বনভূমি মৃত্তিকার ক্ষয় রোধ করে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রন করে।
তাই মানুষের প্রয়োজনে গাছ কাটা হলে সেই ঘাটতি যেন পূরণ করা হয় বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে।

ভারতের অরন্যভূমি: ভারতের গাঙ্গেয় উপত্যকায় রয়েছে অনেক বনভূমি। হিমালয়, তরাই অঞ্চলে, মধ্যপ্রদেশ,
ওড়িষা এবং পূর্ব ভারতেও বেশ কিছু বনভূমি পরিলক্ষিত হয়। ভারতবর্ষের সব বনভূমিকে একত্র করলে
বনভূমির দাঁড়ায় প্রায় ৭৫০ লক্ষ হেক্টর যা সমগ্র ভারতের মোট শতকরা ২২.৭ শতাংশ।

প্রাচীন ভারতের গাছপালার সাথে মানুষের সম্পর্ক : শুধু বর্তমানেই নয়, প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ গাছের সাথে নিজেকে
ঘনিষ্ট সম্পর্কে আবদ্ধ করেছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ভারতীয় প্রাচীন কাব্যগুলিতে। ভারতবর্ষের তপোবন ছিল শিক্ষাকেন্দ্র।
এই তপোবনেই ঋষিরা করেছেন সমগম। রচিত হয়েছে বেদ-উপনিষদ। আবার পিতৃসত্য পালনের জন্য রামচন্দ্রকে যেতে হয়েছে বনে।
মহাভারতের সাথেও বন তথা গাছপালা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে রয়েছে। বাদ যাননি মহাকবি কালিদাসও।
তাঁর কাব্যেও মানুষ ও গাছপালা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

বৃক্ষরোপন কর্মসূচী : মানুষের প্রয়োজনে গাছ কাটা হলে সেই ঘাটতি পূরণের জন্য ভারত সরকার ১৯৫০-এ সর্বপ্রথম
সরকারি পর্যায়ে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী গ্রহণ করেন। বর্তমানে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ব্যাপক বৃক্ষরোপনের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে।
এই কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষাকারী গাছকে লালন করলে তবেই আমরা রক্ষা পাব।

উপসংহার : কাজেই ভুললে চলবে না পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য গাছের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
তাই পাছপালা কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট না করার শপথ আমাদের নিতে হবে। বছরে একদিন ‘পরিবেশ দিবস’ পালন করে।
খুব বেশি উপকার আশা করা উচিত নয়। দরকার প্রতিটি মানুষের মধ্যে গাছপালা সম্পর্কে দৈন্দিন সচেতনতা।
ছাত্র ছাত্রীদেরও এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। তারা যদি মানুষেকে বোঝাতে সক্ষম হয় ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’
তাহলে পৃথিবী হবে সবুজে সবুজ। সুদৃঢ় হবে মানুষ গাছপালার সম্পর্ক।